মাসলোর চাহিদা সোপান তত্ত্ব / Maslow’s Need Hierarchy Theory
ম্যাজলোর চাহিদা সোপান তত্ত্বMaslow’s
Need Hierarchy Theory
প্রয়োজন
(Needs)
ও এর পরিতৃপ্তির সাথে প্রেষণা বিষয়টি বিশেষভাবে সম্পর্ক্’যুক্ত । মানুষের অবাব বা প্রয়োজন
অসীম এবং এর একটি পূরণ হলেই আরেকটি তার স্থান দখল করে। তাই পূরণের সাথে সাথেই এই প্রয়োজন
বা চাহিদা যে এর রূপ পাল্টায় তার ওপর পরীক্ষা – নিরীক্ষা চালিয়ে A.H. Maslow যে তত্ত্ব দাঁড় করিয়েছেন তাকে
“Maslow’s”
Need Hierarchy Theory” বা ‘ম্যাজলোর চাহিদা সোপান তত্ত্ব বলে।
তিনি
তার তত্ত্বে মানুষের প্রয়োজন বা চহিদাকে পাঁচ ভাগে ভাগ করেছেন। যা একের পর এক অবস্থান
করে এবং পর্যায়ক্রমিক এদের পরিতৃপ্তির ওপর কর্মীর প্রেষণা লাভ বিশেষভাবে নির্ভ্রশীল।
নিম্নে রেখাচিত্রের সাহায্যে চাহিদার সোপনসমূহ প্রদর্শিত হলোঃ
উপরের রেখাচিত্রে প্রদর্শিত চাহিদাসমূহ নিম্নে আলোচনা করা হলোঃ
১. জৈবিক চাহিদা ( Physiological Needs ) :
ন্যূনতম বাঁচার প্রয়োজনকে জৈবিক চাহিদা হিসাবে আখ্যায়িত করা যায়। অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থানের
মতো গুরুত্বপূর্ণ্ প্রয়োজন এ শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত। ন্যূনতম বাঁচার অধিকার প্রথমত সবাই
ভোগ করতে চায়। তাই প্রেষণাদানে এ বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ্।
২. নিরাপত্তা
চাহিদা (Safety needs) : জৈবিক প্রয়োজন
পূরণের পর মানুষ সবচেয়ে বেশি চাহিদা বোধ করে নিরাপত্তার । সে নিজেকে ও তার পরিবারকে
বর্ত্’মান ও ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তা ও ঝুঁকির হাত হতে রক্ষা করতে চায়। এ জন্য সে চায় চাকরির
স্থায়িত্ব, ভবিষ্যৎ নিরাপত্ত, উন্নয়ন ও বাঁচার সুযোগ।
৩. সামাজিক চাহদা (Social needs) : মানুষ যখন
নিরাপত্তাবোধে তৃপ্ত হয় তখন সে বন্ধু – বান্ধব ও অন্যদের মাঝে নিজ প্রতিপত্তি প্রতিষ্ঠা
করতে ও অন্যদের ভালোবাসা পেতে চায় । এ পর্যায়ে সে বিভিন্ন সামাজিক ক্রিয়াকর্মে উৎসাহিত
হয় ও নিজেকে সমাজের সাথে সম্পৃক্ত করতে চায় ।
৪. আত্মতৃপ্তির
চাহিদা (Esteem needs) : অতঃপর মানুষ
কাজের মাধ্যে আত্মতৃপ্তির প্রয়োজনীয়তা বোধ করে । আত্মতৃপ্তির প্রয়োজন একজন ব্যক্তির
সুনাম – সুখ্যাতি , যশ, অহংবোধ ইত্যাদির সাথে সংশ্লিষ্ট । এ পর্যায়ে সে বড় বাড়ি, দামি
গাড়ি , বড় চাকরি ইত্যাদির অভাব বা চহিদা বোধ করে।
৫. আত্মপ্রতিষ্ঠার
চাহিদা (Self – actualization needs) :
উপরোক্ত চাহিদা পূরণ হলে যে প্রয়োজন মানুষকে আকর্ষিত করে তা হলো আত্মপ্রতিষ্ঠার চাহিদা।
এ পর্যায়ে সে তার প্রতিভার সর্বাত্মক রূপায়ণে অগ্রসর হতে চায় । শিল্প- সাহিত্য, রাজনীতি,
সভা-সমাবেশ ইত্যাদির মাধ্যমে সে মৃত্যুর পরও নিজেকে অমন করে রেখে যেতে চায় ।
ম্যাজলো
তার চাহিদা সোপান তত্ত্বে যে সকল বিষয় ধরে নিয়েছেন তা হলো মানুষের প্রেষিত আচরণের উৎস
হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের চাহিদা বা অভাব । যে কাজের মাধ্যমে ব্যক্তির যতবেশি চাহিদা পূরণ
হয় সেই কর্মে ব্যক্তির সন্তুষ্টিও তত বেশি হয়ে থাকে । বিভিন্নবাবে সমালোচিত হলেও সার্বিক
বিচারে এ তত্ত্বটি জনপ্রিয়তা ,ব্যাপকতা ও মৌলিকতার দিক দিয়ে অনন্য । পরবর্তীকালে যারাই
প্রেষণা সম্পর্কে গবেষণা করেছেন বা তত্ত্ব দিয়েছেন তার ওপর ম্যাজলোর তত্ত্বের কমবেশি
প্রভাব লক্ষ্য করা যায় ।
No comments