TjT

করনা প্রতিরোধে হাঁচি-কাশির শিষ্টাচার মেনে চলুন। অপরিষ্কার হাত দিয়ে চোখ, নাক ও মুখ স্পর্শ্ করা থেকে বিরত থাকুন। অ্যালকোহল যুক্ত হ্যান্ড স্যানিটাইজার হাতের তালুতে নিয়ে ( 20 সেকেন্ড ) ভাল করে পরিষ্কার করুন। ব্যবহৃত টিস্যু ঢাকনা যুক্ত ডাস্টবিনে ফেলুন। পরিচিত বা অপরিচিত ব্যক্তির সাথে হাত মেলানো বা আলিঙ্গন করা থেকে বিরত থাকুন। আক্রান্ত ব্যক্তি থেকে নিরাপদ দূরত্বে থাকুন।

গল্প-পিরিয়ড

কেউ নেগেটিভ মাইন্ড এ নেবেন না প্লিজ, পারলে সেয়ার করে আপনার বন্ধু বান্ধব, বুন দেরকে সচেতন করুন।


দেখো মা আমার সেলোয়ারে কিসের রক্ত? কথাটা বলেই কেঁদে দিলো কেয়া।


কেয়ার মা,,কেনো কি হয়েছে?


কেয়া,, আমার রক্ত বের হচ্ছে।


মা,,,আস্তে কথা বলো।


কেয়া,,, মা আমার হয়েছে? 


মা,,,, এ বয়সে এমন হয়। এটা কোন সমস্যা না। আমি তোমাকে কাপড় দিচ্ছি তা দিয়ে রাখো যাতে কেউ না দেখে রক্ত।


কেয়া,,,,কেনো? আরো অনেক কেঁদে দিয়ে।


মা আসো সব দেখিয়ে দিচ্ছি।


তারপর কেয়ার মা কেয়াকে নিয়ে দেখিয়ে দিলো কিভাবে এগুলা ব্যবহার করতে হয়। তিনি কেয়াকে কিছু পুরাতন কাপড় দিয়েই দেখিয়ে দিলো।


কেয়া মাত্রই বয়ঃসন্ধিকালে পা দিলো। কেয়ার বয়স ১৩বছর। আজই তার প্রথম ঋতুস্রাব শুরু হলো মানে মানুষ যেটা সহজেই বুঝে মাসিক হওয়া।


স্কুল ছুটির পর যখন বাড়ি ফিরছে তখনই প্রচুর পেট ব্যাথা শুরু হয়। আর বাড়ি ফিরেই বুঝতে পারে তার সেলোয়ার ভিজে গেছে রক্তে। তারপরই অনেক ভয়ে ভয়ে মাকে বলে।


কয়েকটা বছর চলে গেলো। প্রতিমাসেই মাসিক হলে পুরাতন কাপড় ব্যবহার করতো। আর অসহ্য যন্ত্রণা নিয়ে মুখ লুকিয়ে ঘরের কোণায় পরে থেকেই দিন কাটতো সে সময় গুলোতে। কাউকে বলতো না নিজের কষ্টের কথা। কেয়া নবম থেকে দশম শ্রেণীতে পড়ে। দেখতে গায়ের গড়ন ভালই হয়েছে কেয়ার। কেয়ার দিন কাল ভালই কাটছে। কেয়া যখনই ক্যালেন্ডার শেষ দিকে তাকায় তখনই থমকে উঠে কারণ তাকে আবার সেই পুরাতন কাপড় আর ব্যাথা নিয়ে থাকতে হবে কয়েক দিন।


কেয়া দশম শ্রেণীর শেষের দিকে। কেয়ার পেটে প্রচুর ব্যাথা সামনে আগানোর মত শক্তি মনে হয় নাই কেয়ার। কোন রকম কেয়া স্কুল থেকে বাড়ি আসলো। কেয়ার পা পুরো রক্তে ভিজে শুকিয়ে লেগে গেছে


বাড়ি ফিরে কোন রকম গোসল সেরে নিজেকে যতটা লুকিয়ে রাখা যায় সেই লজ্জা থেকে যেনো কেউ না বুঝে। কেয়া আজকে মনে হয় বেশিই কষ্ট পাচ্ছে। কাউকে তো আর বলা যাবে না এটা লজ্জার ব্যাপার।


কেয়ার বাবা সামন্য প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক তাই কেয়ার পরিবার তেমন সচলও না। কিছু দিদিন পর দশম পাশ করার আগেই কেয়াকে বিয়ে দিয়ে দিলো এক ব্যাংক অফিসারের কাছে। কেয়াকে নিয়ে গেলো তার শশুড় বাড়ি। কেয়ার স্বামী শহরে থাকে। বিয়ের কিছুদিন পরই নিয়ে যাবে সব কিছু ঠিক করে শহরে।


কয়েকমাস ভালই কাটলো কেয়ার শশুড় বাড়িতে।


কেয়া দেখছে হিসাব করে কেয়ার মাসিক এখন নিয়মিত হয় না।


কোন মাসে ২-৩হয়ে যায়। কেয়া কাউকে কিছু বলে না এমন কি তার স্বামীকেও না। এখন কেয়ার পেটের ব্যাথাই নয় এটা যেনো বেঁচের থাকার মত হয় না। অনেক কষ্টে কেয়া দিন কাটাতে হয়। অনিয়মিত মাসিকের কথা তার শাশুড়িকে বললো।


তার শাশুড়ি বলে এটা কোন ব্যাপার না আমাদের সময়ও হতো। তার শাশুড়ি তাকে একজন কবিরাজের কাছ থেকে পানি ফুঁ দিয়ে আনলেন আর বলে এটা খেলেই সব চলে যাবে ।


কেয়া তার শাশুড়িকে বলে তাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে। ওনি বলে এ সবের কোন প্রয়োজন নাই। কেয়া আর কি বলবে তার স্বামীকে বললে বলে মা যা বলে তা করো।


কেয়া নিজেকে শক্ত করার চেষ্টা করলো। মনকে যতই শক্ত করুক পেটের ব্যাথাতো আর শক্ত করে রাখা যায় 


না।


কিছুদিন ভাল হয়ে থাকলো আবার হয়ে যায় তার মাসিক। কেয়া বুঝতে পারছে তার নিশ্চয় কোন বড় সমস্যা। এখন সে চাইলেও পারছে না ডাক্তারের কাছে যেতে। তার স্বামীতো আর তার কাছে টাকা দেয় না। কিছুদিন পরই কেয়ার স্বামী আসলো কেয়াকে শহরে নিয়ে যাবে বলে। রাতে কেয়া আর ওর স্বামী ঘুমিয়ে আছে। হঠাৎ কেয়ার পেটের ব্যাথা হলে কেয়া একটা চিৎকার দিয়েই জ্ঞান হারিয়ে ফেলে।


কেয়ার স্বামী কেয়ার মাথায় পানি দিলে কেয়ার জ্ঞান ফিরে। কেয়ার কি সমস্যা জানতে চাইলে আগের মত বলে আমার পেটে ব্যাথা।


কেয়ার বিছানায় পুরো রক্তে ভেসে যায়। কেয়ার স্বামী বুঝতে পারে যে মেয়েদের মাসিক হ এমন সে আর কিছু বলে না। কেয়া বলে,,আমাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যান।


কেয়ার স্বামী বলে,,কালই শহরে গেলে ওখানে কোন ডাক্তার না হয় দেখাবো। পরেরদিন সকালে সব কিছু নিয়ে কেয়াও তার স্বামী চলে যায় শহরে। দুদিন ব্যাথা নিয়ে থাকে সারাদিন ঘরের ভিতর তার স্বামীতো অফিসে। পরেদিন আবার জ্ঞান হারালে কেয়ার স্বামী তাকে হাসপাতাল নিয়ে যায়।


ডাক্তারকে বলে তার পেটে কি তা দেখতে। ডাক্তার কেয়াকে ভাল করে পরীক্ষা করলো। ডাক্তার বলে,,,,তার পরিবারের আর কেউ নাই।


কেয়ার স্বামী,,,,ওরা সবাই গ্রামে কেনো।


ডাক্তার,,,, সবাইকে নিয়ে আসেন তারপর বলবো।


কেয়ার স্বামী পরিবারের সবাইকে আসতে বললে সবাই চলে আসে।


কেয়াকে ঔষধ খাইয়ে শুয়ে রাখলো হাসপাতালের বেডে। ডাক্তার বলে আগে তাকে রক্ত দিতে হবে। ডাক্তার কেয়ার বোনের রক্ত দিলো। কেয়া শুয়ে থাকলো।


ডাক্তার কেয়ার পরিবারের সবাইকে বলে,,,,কেয়ার জরায়ুতে সমস্যা। ওর জরায়ুতে জীবানু হয়ে পচন ধরে গেছে। আর এক জায়গা দিয়ে ছিদ্র হয়ে যাওয়ায় ওর শরীর থেকে রক্ত বের হয়ে যায়। আগে হলে হয়তো ভাল করা যেতো। তার জরায়ুতে যে কোন ভাবে কোন অপরিষ্কার কিছু থেকে জীবানু হয়। তার পর থেকে এমনই।


কেয়ার স্বামী,,,,, কি করতে হবে এখন।


ডাক্তার,,,,, তার জরায়ু কেটে ফেলে দিতে হবে। আর ও কোন দিন মা হতে পারবে না।


কেয়ার স্বামী,,, ওটা করা যাবে না। আমাদের সন্তান লাগবে। আপনি বরং ঔষধ দেন ভাল হওয়ার।।


ডাক্তার,,,,,, আপনারা ভাল করে বুঝে বলেন। হয়তো ভাল হতে পারে তা না হলে মৃত্যু নিশ্চিত।


কেয়ার পরিবার বলে সন্তানের দরকার আছে।


ডাক্তার কেয়াকে কিছু ঔষধ লিখে দিলো। কেয়াকে নিয়ে বাসায় চলে আসলো। কেয়ার রক্ত যাওয়া এখনো বন্ধ হয় নাই। সবাই বলে দুদিন পর ঠিক হয়েয়ে যাবে।


কেয়ার পেটের ব্যাথার জন্য ঔষধ দিলো তা খেয়ে ব্যাথা কমিয়ে রাখে। দুদিন পর কেয়া আর চলাচল করতে পারছে না। তাকেকে হাসপাতাল নিয়ে গেলো।


ডাক্তার দেখে কেয়ার পুরো শরীরে রক্ত নাই।


ডাক্তার কিছু করার আগেই দুনিয়া ছেড়ে দিলো কেয়া। কেয়ার লাশটা পরে আছে হাসপাতালের বেডে।


===================


মেয়েরা যারা আছেন মাসিক একটা প্রাকৃতিক জিনিস যা হবেই। আপনারা মাসিক চলার সময় জীবানু মুক্ত প্যাড এবং যতটা পারেন পরিষ্কার থাকবেন। না কেয়ার মত জীবন হারাবেন অকালে।আর ছেলেরা, একটা মেয়ের জীবন থেকে সন্তান বেশি না। মনে রাখবেন


====সমাপ্ত==>====


No comments

Powered by Blogger.

আসুন করনা সম্পর্কে সচেতন হই সুস্থ থাকি ।